মুহাম্মদ আবু সিদ্দিক ওসমানী :
মিয়ানমারের পশ্চিমাঞ্চলীয় প্রদেশ রাখাইনের সীমান্ত শহর মংডুর বাসিন্দাদের শহর ছেড়ে নিরাপদ কোনো স্থানে আশ্রয় নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে রাখাইনভিত্তিক সশস্ত্র রাজনৈতিক গোষ্ঠী আরাকান আর্মির রাজনৈতিক শাখা ইউনাইটেড লীগ অব আরাকান।
সোমবার (১৭ জুন) মংডুর বাসিন্দাদের উদ্দেশ্যে দেওয়া এক বার্তায় ইউনাইটেড লীগ অব আরাকানের পক্ষ থেকে বলা হয়, সামনের দিনগুলোতে মংডু শহরের পরিস্থিতি অস্থিতিশীল ও আরো অশান্ত হয়ে উঠার আশংকা রয়েছে। তাই শহরবাসীকে আপাতত নিরাপদ কোনো স্থনে সরে যাওয়ার অনুরোধ জানানো হচ্ছে।
মংডু বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তবর্তী শহর। দুই দেশের ভূখণ্ডকে বিভক্ত করেছে যে নাফ নদী, সেই নদীর এক তীরে বাংলাদেশের টেকনাফ, অপর তীরে মংডুর অবস্থান। রাখাইনের অন্যতম বাণিজ্যিক কেন্দ্রও এই শহরটি। এখানে প্রচুর বাংলাদেশীও বসবাস করে থাকে।
মংডু দখলের উদ্দেশ্যে গত মে মাস থেকে সেনা ছাউনি ও পুলিশ স্টেশনগুলো লক্ষ্য করে ব্যাপক হামলা শুরু করে আরাকান আর্মি (AA)। সেই হামলার ফলাফলও গোষ্ঠীটির পক্ষে যায়। মে শেষ হওয়ার আগেই মংডু জেলার উত্তরাঞ্চল এবং বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী অপর শহর বুচিডংয়ের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে ফেলতে সক্ষম হয় আরাকান আর্মি।
গত সপ্তাহে মংডুর ১০টি সেনা ছাউনির দখল নিয়েছে আরাকান আর্মি। এসবের মধ্যে মায়াওয়াদি ট্যাক্টিক্যাল কমান্ড বেস, না খাউং তো সেনা ছাউনি এবং আহ লেল থান কিয়াও সেনা ছাউনিও রয়েছে। মংডু জেলাজুড়ে যত সেনা ছাউনি রয়েছে, সেসবের মধ্যে এ দু’টি ছাউনি শক্তিশালী। আরাকান আর্মির যোদ্ধাদের সঙ্গে সংঘাতে প্রাণ হারিয়েছেন ২ শতাধিক জান্তা সেনা। নিহতদের মধ্যে মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর একজন কর্নেলও রয়েছেন।
২০২১ সালের ফেব্রুয়ারি অভ্যুত্থানের মাধ্যমে মিয়ানমারের গণতন্ত্রপন্থি নেত্রী অং সান সুচির নেতৃত্বাধীন সরকারকে হটিয়ে জাতীয় ক্ষমতা দখল করে সেনা বাহিনী। সেনাপ্রধান জেনারেল মিন অং হ্লেইং এই অভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দেন। মিয়ানমারের বর্তমান সামরিক সরকারের প্রধানও তিনি।
জান্তা ক্ষমতা দখলের পরপরই বিক্ষোভ শুরু হয় মিয়ানমারে। ২০২২ সালের মাঝামাঝি থেকে সেই বিক্ষোভের নেতৃত্বে আসে জান্তাবিরোধী বিভিন্ন সশস্ত্র রাজনৈতিক গোষ্ঠী। ২০২৩ সালে নভেম্বর থেকে দেশের বিভিন্ন এলাকায় জান্তার বিরুদ্ধে জোটবদ্ধভাবে যুদ্ধে নামে গোষ্ঠীগুলো। সেই যুদ্ধ এখনও চলছে এবং ইতোমধ্যে দেশের এক পঞ্চমাংশ এলাকার নিয়ন্ত্রণ হারিয়েছে ক্ষমতাদখলকারী জান্তা।
আমরা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।
